Blog Archive

Written By Bangladeshi on Thursday, 2 March 2017 | 21:49

শাহদর থেকে দূরের এক পাহাড়ে নাকি খোদার এক দূতের অবতরণ ঘটেছে। হাজার হাজার মানুষ স্পষ্ট চোখে দেখেছে, আলোর ভেলায় ভেসে ভেসে শুভ্রপোষাকধারী একজন মানুষ এক পাহাড়ে নেমে এসেছে এবং শুনিয়েছে এক দৈববাণী- ‘যে তার কথা শুনবে এই দুনিয়াতেই সে পেয়ে যাবে তার কাঙ্ক্ষিত বেহেশত। পরকালের বেহেশতের জন্য আর তাকে অপেক্ষা করতে হবে না।’ খোদার সেই দূতের নাম হাসান ইবনে সবা। অথচ খোদার কোন দূত তো দূরের কথা সর্বশ্রেষ্ঠ নবী রাসুলুল্লাহ (স) এর অবতরণও তো এতো বর্ণাঢ্য ও অলৌকিক হয়নি। তাছাড়া রাসূলুল্লাহ (স) এর পরে তো আর কোন নবী বা ‘আসমানী দূত’ আসবে না।

দেরীতে হলেও টনক নড়লো সেলজুকি প্রশাসনের। কিন্তু ততদিনে হাসান ইবেন সবা তার বিশাল এবং অপ্রতিরোধ্য এক শিষ্যবাহিনী গড়ে তুলেছে। যাদেরকে সে নিয়মিত হাশীষ (এক ধরনের মাদক) পান করায় এবং জাদু প্রয়োগ করে সম্মোহিত করে রাখে। এই জাদু ও হাশীষের প্রয়োগে বিশেষভাবে তৈরি করে শত শত সুন্দরী ও নিষ্পাপ মেয়েদের। এদেরকে ব্যবহার করে হাসান ইবনে সবা দেশের বড় বড় ব্যবসায়ী, রঈস, আমীর আমলাদের তার অন্ধভক্ত করে তোলে। শুধু তাই নয়, সারা দেশ জুড়ে তার বাহিনী লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করে। বড় বড় কাফেলা লুট করে সম্পদের পাহাড় গড়তে থাকে। দখল করতে থাকে একের পর এক দুর্গ ও শহর। ইসলামের নামে অনৈসলামিক, অনৈতিক এবং অশ্লীল কথা সমাজে ছড়াতে শুরু করে হাসান ইবনে সবার শিষ্যরা। প্রতিটি কেল্লা ও শহরের যুবক যুবতীদের তারা নারীসক্ত ও মাদকাসক্ত বানানোর ভয়ংকর সব কার্যক্রম শুরু করে। যারাই প্রকাশ্যে এর প্রতিবাদ করে তাদেরকে তারা খুন করে গুম করে দেয়। সেলজুকিরা তাকে ও তার গুরু আহমদ ইবনে গুতাশকে এবং তার বাহিনীকে জীবিত বা মৃত ধরার জন্য পাঠায় একের পর এক সেনাবাহিনী। ব্যর্থ হয় প্রতিটি সেনা অভিযান। একবার তো হাসান ইবনে সবা সেলজুকিদের এক হাজার সেনাবাহিনীর একদলকে কৌশলে হাশীষের পানি পান করিয়ে এবং ‘রাম’ বানিয়ে ফেরত পাঠায়। অথচ সেলজুকিরাও কম দুর্ধর্ষ ছিলো না। সেলজুকিদের ইতিহাসে ব্যর্থতা বা পরাজয় বলতে কোন শব্দ ছিলো না।

সেলজুকিদের এই ব্যর্থতা দেখে এগিয়ে আসে অসম সাহসী, বীরদীপ্ত, সৌম্য দর্শন এক যুবক মুযাম্মিল আকেন্দী। ‘রায়’ শহরে গিয়ে পরিচয় হয় অসম্ভব রূপবতী এক মেয়ে সুমনার সঙ্গে। দু’জনের মনেই আলোড়ন তোলে পরস্পরের প্রেম স্নিগ্ধ চোখের ভাষা। তবে সে প্রেমের পবিত্র আলপনায় তারা জুড়ে দেয় রক্ত রঞ্জিত এক শপথ বাক্য- সত্য সুন্দকে বাঁচানোর জন্য মানুষের মুক্তির জন্যে, মুসলমানদেরকে রক্ষার জন্যে হাসান ইবনে সবা ও তার ফেরকার অস্তিত্ব বিনাশ করতে হবে।

কিন্তু হাসান ইবনে সবার কাছে তার যত বড় শত্রুই যাক তাকে দেখামাত্র তার পরম শিষ্য বনে যায়। তাছাড়া হাসান ইবনে সবা ক’দিন আগে ছদ্মবেশ ধরে সেলজুকি প্রশাসনের এক গুরুত্বপূর্ণ পদ বাগিয়ে নিয়েছে। সে হয়ে গেছে এখন সুলতান মালিক শাহর অন্যতম উপদেষ্টা আর কিছুদিনের মধ্যে সে মুঠোয় পুরে নেবে পুরো সেলজুকি সাম্রাজ্য। তারপর নিশ্চিহ্ন করে দেবে মুসলমানদের নাম নিশানা। সেখানে প্রতিষ্ঠা করবে শয়তানের রাজত্ব।

0 comments:

Post a Comment

E Boi Download© 2014. All Rights Reserved. Template By Seocips.com
SEOCIPS Areasatu Adasenze Tempate Published By Kaizen Template