Blog Archive

Written By Bangladeshi on Friday, 10 March 2017 | 00:19

জিন আল্লাহ তাআলার একটি সৃষ্টি। যেমন তিনি ফেরেশ্‌তা, মানুষ সৃষ্টি করেছেন তেমনি সৃষ্টি করেছেন জিন। তাদের বিবেক, বুদ্ধি, অনুভূতি শক্তি রয়েছে। তাদের আছে ভাল ও মন্দের মধ্যে পার্থক্য করার ক্ষমতা। তাদের মধ্যে আছে ভাল জিন ও মন্দ জিন। আল কুরআনে  জিনদের বক্তব্য উল্লেখ করে বলা হয়েছে:
আর নিশ্চয় আমাদের কতিপয় সৎকর্মশীল এবং কতিপয় এর ব্যতিক্রম। আমরা ছিলাম বিভিন্ন মত ও পথে বিভক্ত। (সূরা আল জিন : ১১)
এ গোষ্ঠির নাম জিন রাখা হয়েছে, কারণ জিন শব্দের অর্থ গোপন। আরবী জিন শব্দ থেকে ইজতিনান এর অর্থ হল ইসতেতার বা গোপন হওয়া। যেমন আল কুরআনে আল্লাহ বলেছেন :
فَلَمَّا جَنَّ عَلَيْهِ اللَّيْلُ
অতঃপর যখন রাত তার উপর আচ্ছন্ন হল … (সূরা আল আনআম : ৭৬)
এখানে জান্না অর্থ হল, আচ্ছন হওয়া, ঢেকে যাওয়া, গোপন হওয়া।
তারা মানুষের দৃষ্টি থেকে গোপন থাকে বলেই তাদের নাম রাখা হয়েছে জিন। যেমন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন:
নিশ্চয় সে ও তার দলবল তোমাদেরকে দেখে যেখানে তোমরা তাদেরকে দেখ না। (সূরা আল আরাফ : ২৭)
জিনদের সৃষ্টি করা হয়েছে আগুন দিয়ে। মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ বলেন:
আর ইতঃপূর্বে জিনকে সৃষ্টি করেছি উত্তপ্ত অগ্নিশিখা থেকে। (সূরা আল হিজর : ২৭)
এ আয়াত দ্বারা আমরা আরো জানতে পারলাম যে, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মানুষ সৃষ্টি করার পূর্বে জিন সৃষ্টি করেছেন। ইরশাদ হয়েছে:
আর অবশ্যই আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি শুকনো ঠনঠনে, কালচে কাদামাটি থেকে। আর এর পূর্বে জিনকে সৃষ্টি করেছি উত্তপ্ত অগ্নিশিখা থেকে। (সূরা আল হিজর : ২৬-২৭)
আল্লাহ তাআলা যে উদ্দেশ্যে মানুষ সৃষ্টি করেছেন সে-ই উদ্দেশ্যেই জিনকে সৃষ্টি করেছিলেন। তিনি বলেন:
আর জিন ও মানুষকে কেবল এজন্যই সৃষ্টি করেছি যে, তারা আমার ইবাদাত করবে। (সূরা আয যারিয়াত : ৫৬)
জিনদের কাছেও তিনি নবী ও রাসূল প্রেরণ করেছিলেন। তিনি বলেন:
হে জিন ও মানুষের দল, তোমাদের মধ্য থেকে কি তোমাদের নিকট রাসূলগণ আসেনি, যারা তোমাদের নিকট আমার আয়াতসমূহ বর্ণনা করত এবং তোমাদের এই দিনের সাক্ষাতের ব্যাপারে তোমাদেরকে সতর্ক করত? তারা বলবে, আমরা আমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিলাম। আর দুনিয়ার জীবন তাদেরকে প্রতারিত করেছে এবং তারা নিজেদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে যে, তারা ছিল কাফির। (সূরা আল আনআম : ১৩০)
এ আয়াত দ্বারা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়, বিচার দিবসে মানুষের যেমন বিচার হবে তেমনি জিন জাতিকেও বিচার ও জবাবদিহিতার সম্মুখীন হতে হবে।
তারা বিবিধ রূপ ধারণ করতে পারে বলে হাদীসে এসেছে। এমনিভাবে দ্রুত এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে পারে বলে আল কুরআনের সূরা আন নামলে উল্লেখ করা হয়েছে।
আসমানী কিতাবে যারা বিশ্বাসী-ইহুদী, খৃষ্টান ও মুসলমান- তারা সকলে জিনের অস্তিত্বে বিশ্বাস করে। তারা কেউ জিনের অস্তিত্ব অস্বীকার করে না। পৌত্তলিক, কতিপয় দার্শনিক, বস্তুবাদী গবেষকরা জিনের অস্তিত্ব অস্বীকার করে না। দার্শনিকদের একটি দল বলে থাকে, ফেরেশ্‌তা ও জিন রূপক অর্থে ব্যবহার করা হয়। সুন্দর চরিত্রকে ফেরেশ্‌তা আর খারাপ চরিত্রকে জিন বা শয়তান শব্দ দিয়ে বুঝানো হয়। অবশ্য তাদের এ বক্তব্য কুরআন ও সুন্নাহর সম্পূর্ণ পরিপন্থী।

জ্বিন ও শয়তানের ইতিকথা

প্রকাশনীঃ আধুনিক প্রকাশনী






0 comments:

Post a Comment

E Boi Download© 2014. All Rights Reserved. Template By Seocips.com
SEOCIPS Areasatu Adasenze Tempate Published By Kaizen Template