আর ঘুমিও না নয়ন মেলিয়া,
ঊঠরে মোসলেম ঊঠরে জাগিয়া,
আলস্য জড়তা পায়েতে ঠেলিয়া,
পূত বিভু নাম স্মরণ করি।
যুগল নয়ন করি উন্মীলন,
কর চারিদিকে কর বিলোকন,
অবসর পেয়ে দেখ শত্রুগণ,
করেছে কীদৃশ অনিষ্ট সাধন,
দেখো চাহিয়া অতীত স্মরি।
বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ঠিক পূর্বে যিনি বাংলা ভাষায় ও মুসলিম উম্মাহর পক্ষে আগুনের বীণা বাজিয়েছিলেন, তিনি হলেন সৈয়দ ইসমাইল হোসেন শিরাজী। বাংলা সাহিত্য জগতে তখন ইসলাম ও মুসলমান জাতিকে হেয় করা -কটাক্ষ করা- বিকৃত করা -অপমানিত করার উতসব চলছিলো, ইসমাইল হোসেন সিরাজীই নজরুল-পূর্ব সেই যুগে কলম হাতে তুলে নিয়ে প্রবল পরাক্রমে তার মোকাবিলা শুরু করেছিলেন!
ইসমাইল হোসেন শিরাজীর মৃত্যুর পরে কাজী নজরুল ইসলামের দেয়া ভাষনের কথাগুলোই তার পরিচয় প্রকাশে যথেষ্ট। নজরুল বলেছিলেন-
"শিরাজী সাহেব ছিলেন আমার পিতৃতূল্য। তাহার সমগ্র জীবনই ছিল অনল-প্রবাহ। আমার রচনায় সেই অগ্নি-স্ফুলিঙ্গেরই প্রকাশ! আজ সিরাজগঞ্জে আসিয়া সর্বপ্রধান অনুভব করিতেছি, আমাদের মহানুভব নেতা- বাঙলার তরুন মুসলিমের সর্বপ্রথম অগ্রদূত, তারুণ্যের নিশান-বর্দার মৌলানা সৈয়দ ইসমাইল হোসেন শিরাজী সাহেবের। সিরাজগঞ্জের শিরাজীর সাথে বাঙলার শিরাজ, বাঙলার প্রদীপ নিভিয়া গিয়াছে। যাহার অনল-প্রবাহসম গৈরিকনিঃস্রাব জ্বালাময়ী ধারা মেঘনিরন্ধ্র গগনে অপরিমাণ জ্যোতি সঞ্চার করিয়াছিলো, নিদ্রাতুরা বঙ্গদেশ উন্মাদ আবেগ লইয়া মাতিয়া উঠিয়াছিলো - অনল প্রবাহের সেই অমর কবির কণ্ঠস্বর বানীকুঞ্জে আর শুনিতে পাইবনা। বেহেশতের বুলবুলি বেহেশতে উড়িয়া গিয়াছে, জাতির- কওমের-দেশের যে মহাক্ষতি হইয়াছে-আমি শুধু তাহার কথাই বলিতেছিনা, আমি বলিতেছি আমার আমার একার বেদনার ক্ষতির কাহিনী। আমি তখন প্রথম কাব্য-কাননে ভয়ে ভয়ে পা টিপিয়া টিপিয়া প্রবেশ করিয়াছি"......
অনল-প্রবাহ [Onol Probah]
Written By Bangladeshi on Friday, 17 February 2017 | 05:40
Bangladeshi
at
05:40
0 comments:
Post a Comment